মাদক বিক্রেতাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, ‘যারা এই ব্যবসাকে পেশা হিসেবে নিয়েছেন, তাদের জন্য দুঃসংবাদটি হলো আপনাদের জন্য হয় কারাগার, নাহলে কোথায় যাবেন, সেটা আপনারাই দেখবেন। এই জায়গায় কোনো ছাড় নয়। যারা এই ব্যবসায় উৎসাহ, অর্থ ও সহযোগিতা দেয়, তাদের সম্পর্কে আমাদের গোয়েন্দারা তালিকা তৈরি করছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা একের পর এক নেওয়া হবে। মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ চলবে।’ মাদক নির্মূল করা সম্ভব না হলেও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘সীমান্ত দিয়ে মাদকপাচার ঠেকাতে পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা, সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর ও তাদের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হলেও তারা কথা রাখছে না। প্রতিবেশী দেশ ভারত তাদের সীমান্তে থাকা মাদক কারখানাগুলো বন্ধ করে দিলেও মিয়ানমার সে জায়গায় সহযোগিতা করছে না।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মিয়ানমারের প্রতিনিধিরা আসেন, আমাদের সঙ্গে আলোচনা করেন, এমইউ স্বাক্ষর করেন। কিন্তু কোনো কার্যকারিতা দেখছি না। সেজন্য ভয়ঙ্কর মাদক আমাদের দেশে প্রবেশ করছে।’
তবে মিয়ানমার কোনো এক সময় বাংলাদেশকে সহায়তা করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন মন্ত্রী। তার ভাষ্য, ‘মিয়ানমারের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে আমি নিজে কথা বলেছি। আমাদের সমস্যার কথা বলেছি। আশা করি, তারা কোনো এক সময় সহায়তা করবেন। আমরা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে কোনো মাদক উৎপাদন হয় না বা তৈরি হয় না। দেশে শুধু একটি কোম্পানি আছে, যারা এখানে নিয়ন্ত্রিতভাবে ব্রিটিশ আমল থেকে খুবই সামান্য পরিমাণ মাদক তৈরি করে। পার্শ্ববর্তী ও অন্যান্য দেশের মাধ্যমে আমাদের দেশে মাদক প্রবেশ করে। আমরা সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়েছি। আমরা বিজিবি ও কোস্ট গার্ডকে শক্তিশালী করছি, যাতে কোনোভাবেই মাদক প্রবেশ করতে না পারে।’
সীমান্তে সেন্সর ডিভাইস বসিয়ে নজরদারি করা হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। বক্তব্যে তিনি জানান, সীমান্ত রক্ষার জন্য আমরা বিজিবির শক্তিও দক্ষতা বাড়াচ্ছি। আমরা বর্ডার লাইনে কোটখালিতে সেন্সর ডিভাইস বসিয়েছি। সীমান্ত দিয়ে কেউ যাতায়াত করলে বিজিবি তা টের পায়। আমরা এতে ফলও পাচ্ছি। দেশে যাতে অবৈধ মাদক প্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য ক্রমান্বয়ে আমরা অন্য বর্ডারগুলোতেও এ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মাদকের ব্যাপারে আমরা আপসহীন। মাদকের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের আমরা চিহ্নিত করছি, শনাক্ত করছি। তাদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছি আমরা। মাদকের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।’